কিয়োটো চুক্তি-এক বাতিল কাগজ?

ডিসেম্বর 15, 2010


মেক্সিকোর কানকুন সমুদ্রসৈকতের বিলাসবহুল রিসর্টে দু’সপ্তাহ ধরে চলা চাপান উতর শেষে সর্ব্বসম্মত ভোট ছাড়াই শেষ হল বৈঠক। ঠিক গত বছর কোপেনহেগেনে যা ঘটেছিল ঠিক যেন সেই চিত্রনাট্যেরই পুনরাবৃত্তি। কিয়োটো পরিবেশ চুক্তি যে এই ভাবে এক বছর থেকে পরের বছরের পরিবেশ শীর্ষ বৈঠকে চালান হতে হতে বাতিল কাগজের ঝুড়িতে স্থান পাবে, সে নিয়ে প্রায় আর কোনও সন্দেহ নেই। ২০১০ -এ কিয়োটো প্রটোকলের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। হয়নি তার মেয়াদ বাড়ানোর লক্ষ্যে কোনও চুক্তি। স্বভাবতই উন্নত দেশগুলো খুশি। শেষ পর্যন্ত বেশ সফলভাবেই তারা প্রায় ভেস্তে দিল কিয়োটো চুক্তিকে। (পরবর্তী অংশ)


‘ডঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায় – কিছু প্রশ্ন’

অক্টোবর 9, 2010


বাঙালী কাঁকড়ার জাত। এই বহু প্রচলিত কথাটা আবারও প্রাসঙ্গিকভাবেই মনে এলো চিকিৎসা বিভাগে এবারের নোবেল পুরষ্কার ঘোষনার পর। চিকিৎসা বিঞ্জানে এবার নোবেল পুরষ্কার পেলেন ব্রিটিশ বিঞ্জানী প্যাট্রিক স্টেপ্টো ও রবার্ট এডওয়ার্ড। এনারা পৃথিবীর প্রথম ‘টেস্ট টিউব বেবীর’ জন্ম দেন ২৫শে জুলাই, ১৯৭৮। এর ঠিক ৬৭ দিন পরে ৩রা অক্টোবর, ১৯৭৮ সালে পশ্চিমবঙ্গে ডাঃ সুভাষ মুখার্জী জন্ম দেন ভারতের প্রথম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় টেস্ট টিউব বেবী ‘দুর্গার’। অবশ্য সেই স্বীকৃতি তিনি জীবিত অবস্থায় পান নি। সরকারীভাবে স্বীকৃত ভারতের প্রথম টেস্ট টিউব বেবীর জনক টি.সি. আনন্দ কুমার ডাঃ মুখার্জীর গবেষনার কাগজপত্র দেখে ওনাকেই পথিকৃৎ হিসেবে মেনে নেন। ডঃ কুমার বর্তমানে ডঃ সুভাষ মুখার্জীর স্মৃতি রক্ষার্থে reproductive biology নিয়ে গবেষণার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার কাজে লিপ্ত আছেন। (পরবর্তী অংশ)


পরমানু দায়বদ্ধতা বিল (Nuclear Liability Bill)

সেপ্টেম্বর 4, 2010


অবশেষে সংসদে পাশ হয়ে গেল পরমানু দায়বদ্ধতা বিল। এটাকে ঠিক ভাবে বললে পরমানু দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তির বিল বলা উচিৎ। বিলটা নিয়ে সরকারের উৎসাহ এবং তা নিয়ে না না বিতর্ক অনেকদিন ধরেই চলছিল। সরকার চাইছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের আগেই বিলটা পাশ করাতে।

বিলটা নিয়ে বিতর্ক মোটামুটি তিনটি বিষয়ে–

১) যেখানে ১৯৬০ সাল থেকে দেশে পরমানু চুল্লী ব্যবহৃত হচ্ছে, হঠাৎ এখন কি এমন দরকার পড়ল নতুন বিলের।

২) ক্ষতিপূরনের পরিমান নিয়ে বিতর্ক। প্রথমে সরকার ঠিক করেছিল ৫০০ কোটি টাকা, পরে বিরোধিতার চাপে শেষ পর্যন্ত্য ১৫০০ কোটি টাকা নির্ধারন করেছে। যদিও এই পরিমান নিয়েও সঙ্গত বিরোধিতা আছে। যেখানে খোদ আমেরিকায় ক্ষতিপূরনের অঙ্ক ১১৯০ কোটি ডলার সেখানে আমেরিকান কোম্পানির জন্য এবং ভবিষ্যৎ ভারতীয় পরমানু উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর দায়বদ্ধতা মাত্র ১৫০০ কোটি? (পরবর্তী অংশ)


“প্রশ্নগুলো সহজ আর উত্তরতো জানা….”

সেপ্টেম্বর 1, 2010


প্রশ্নঃ
সম্প্রতি সীতারাম ইয়েচুরির একটা মন্তব্য খবরের কাগজে দেখলাম। বলেছেন, “যখন ছাত্র সংগঠন করতাম দেখতাম দপ্তরের বাইরে অনেক সাইকেল। তারপর যখন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলাম দেখতাম দপ্তরের বাইরে অনেক স্কুটার। আর এখন পলিটব্যুরোর সদস্য, এখন দপ্তরের বাইরে দেখি গাড়ীর মেলা। জানি না এটা উন্নতি না বিচ্যুতি।”
উত্তরঃ
আমি নিজে কোনো মন্তব্য করব না, কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ২৫ বছর আগে লেখা একটা কবিতা দিয়ে দিলাম–

    ঘোড়া

"কাল থেকে ঠিক পালটে যাব
দেখে রাখিস তোরা,"
বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়ল অশ্বমেধের ঘোড়া
পথের মধ্যিখানে ।
 (পরবর্তী অংশ)

“বিরহের গান”

অগাষ্ট 19, 2010


বহু দূরের অসীম আকাশ আজ বনরাজিনীলা পৃথিবীর শিয়রের কাছে নত হয়ে পড়ল। কানে কানে বললে, “আমি তোমারই।”

পৃথিবী বললে, “সে কেমন করে হবে। তুমি যে অসীম, আমি যে ছোট।”

আকাশ বললে, “আমি তো চার দিকে আমার মেঘের সীমা টেনে দিয়েছি।”

পৃথিবী বললে, “তোমার যে কত জোতিষ্কের সম্পদ, আমার তো আলোর সম্পদ নেই।”

আকাশ বললে, “আজ আমি আমার চন্দ্র সূর্য তারা সব হারিয়ে ফেলে এসেছি, আজ আমার একমাত্র তুমি আছ।” (পরবর্তী অংশ)


6th August, 1945

অগাষ্ট 7, 2010

(১৯৪৫-এর ৬ই আগষ্ট, সকাল আটটা বেজে পনেরো মিনিট, রৌদ্রকরোজ্জ্বল হিরোশিমার যে আকাশে উড়োজাহাজ ‘এনোলা গে’ ‘লিটিল বয়’কে বয়ে এনে ছেড়ে দিল, মাটি থেকে সেই ঊর্ধ্বাকাশে লক্ষ সূর্যের ঝলকানি থেকে তিন মাইল দূরে দাঁড়িয়েছিলেন ৩৩ বছর বয়স্কা ফুতাবা কিতাইয়ামা। বিস্ফোরণের ছ’ঘন্টা পরে কন্ঠনালী গলে যাবার আগে রেডক্রশ প্রতিনিধিদের কাছে অভিঞ্জতার যে নিদারুন চিত্রটি দেখিয়েছিলেন বর্ণনায়–নীচের সংলাপগুলি তারই টুকরো অংশ।)

কে যেন চিৎকার করে উঠল—প্যারাস্যুট, পারাস্যুট নামছে, কানে যেতেই চমকে আকাশের দিকে তাকালাম। পরমুহূর্তেই এক ঝলক নীলাভ সাদা আলো, যার কোনো শিখা নেই, আমার চোখ ধাঁধিয়ে দিল। দ্রুত ধাবমান রেলগাড়ির মতো পায়ের তলার মাটি দুলে উঠছে। মাটির ওপর আমি সটান পরে গেলাম। পরমুহূর্তেই ধ্বংসস্তুপের নীচে তলিয়ে যাচ্ছি, আমি চাপা পরে গেলাম বাড়িঘর, দেয়াল দরজা, কড়ি বরগার অন্ধকারে। তবু আপ্রান চেষ্টায় ভষ্ম আর ধ্বংসস্তুপের মধ্যে থেকে কোনোক্রমে বেরিয়ে এলাম। (পরবর্তী অংশ)


বিশ্ব-উৎসবের শেষে

জুলাই 15, 2010


শেষ হয়ে গেল বিশ্বকাপ ফুটবল। এক মাস ব্যপি উৎসবের সমাপ্তি। রাত জেগে খেলা দেখা, পরদিন ঢুলুঢুলু চোখে অফিস যাওয়া। ফাইনাল খেলার দিন ভাবছি যেন ৯০ মিনিটেই খেলার নিষ্পত্তি হয়, তাহলে অন্তত পৌনে দু’টোয় শুতে পারব। কিন্তু না একস্ট্রা টাইমে গেলই- তখন ভাবছি ট্রাই ব্রেকারে যেন না যায়। যাক ট্রাই ব্রেকারে আর যেতে হয়নি। (পরবর্তী অংশ)


বিচারের বাণী………

জুলাই 2, 2010


পৃথিবীর ইতিহাসে বৃহত্তম গ্যাস দুর্ঘটনায় আদালতের রায় প্রকাশিত হওয়ার পরে সারা দেশ জুড়ে উঠেছে প্রবল সমালোচনার ঝড়। শুধু দেশেই নয়, বিদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রেও এই খবর গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে এবং সমালোচিত হয়েছে এই রায়। স্বাভাবিকভাবে সেই অবধারিত প্রশ্নটাই উঠে এসেছে– ‘ভারতের বিচার ব্যবস্থা বিত্তশালী ও প্রভাবশালীদের পক্ষে’ বা ‘বিচারও ক্রয়যোগ্য পণ্য’। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এ. এম. আহমেদি কথাই ধরা যাক– ১৯৯৪ সালে

( # ধুমপানের বিপদ সম্পর্কে অবহিত না করার জন্য তামাক কোম্পানি ‘ফিলিপ্স
মরিস’ কে জরিমানা দিতে হয়েছিল ৩ বিলিয়ন ডলার।
# এ্যসবেসটস কোম্পানি ‘জন্স মারভিল’ কে জরিমানা দিতে হয়েছিল ৫০০ মিলিয়ন
ডলার।
# ১৯৮৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা উপকুলে ‘এক্সন ভ্যালডেজ’ দুর্ঘটনা– এই
তেল দুর্ঘটনায় ক্ষতি হয়েছিল প্রকৃতির-উদ্ভিদ, জীবজন্তুর- ক্ষতিপূরণ ধার্য হয়েছিল ১০০ কোটি ডলার।
# ভুপাল গ্যাস দূর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ মাত্র ৪৭০ মিলিয়ন ডলার। )

N.G.O. গুলোর প্রবল বাধা উপেক্ষা করে ভুপাল কোর্টের রায় বাতিল করে ইউনিয়ন কার্বাইড কোম্পানির শেয়ার বিক্রির অনুমতি দেয় সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল বেঞ্চ যার মাথায় ছিলেন ব্বিচারপতি আহমেদি। দু’বছর বাদে এই আহমেদিই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ লঘু করে দেয়। (আহমেদি সাহেব চাকরি থেকে অবসরের পর মূলত দুর্ঘটনার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসার জন্য গঠিত ‘ভুপাল মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্র’ এর ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান হন। উনি সিদ্ধান্ত নেন যে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ওই হাসপাতালে বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাবে। বিচারপতি আহমেদি নিজেই ওই হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়েছেন)। (পরবর্তী অংশ)


“জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড”

জুন 26, 2010


২৫ বছরেরও বেশি সময় লাগল ভুপাল গ্যাস দুর্ঘটনার বিচার শেষ হতে। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদ্য নিযুক্ত চেয়ারপার্সন কে.জি. বালকৃষ্ণণও মানছেন যে রায় বেরোতে বেশ দেরিই হয়েছে। কিন্তু শুধুই কি দেরি- যে দুর্ঘটনায় ২৫,০০০ মানুষের মৃত্যু হল, যে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে চিরতরে বিকলাঙ্গ হয়ে গেল আরও কয়েকটি প্রজন্ম, যে দুর্ঘটনার জেরে আজও জন্মাচ্ছে বিকলাঙ্গ শিশু-সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাজা মাত্র দু’বছর? এই ২৫ বছরে আক্রান্তদের অনেকেই মারা গেছেন, আর যারা এখনও বেঁচে আছেন তাদের মধ্যে অনেকে শরীরে বিষ নিয়ে প্রতিদিনকার জীবনসংগ্রামে লড়াই করতে করতে হতাশায় মানসিক রোগগ্রস্ত- যাদের সামান্য আয়ের সিংহভাগই খরচ হয়ে যায় চিকিৎসায় – শুধুমাত্র ন্যায় বিচারের আশায় বুক বেধে দলে দলে হাজির হয়েছিলেন আদালতের বাইরে। তাদের কাছে এই রায় কি বার্তা বয়ে আনে, রাষ্ট্রের প্রতি- বিচার ব্যবস্থার প্রতি তাদের কতটা আস্থাশীল করতে পারে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। এই দীর্ঘ সময়ে নদীতে অনেক জল বয়ে গেছে- আক্রান্ত মানুষগুলো এবং কিছু নাছোড়বান্দা মানুষ-N.G.O. কর্মী বাদ দিয়ে বাকি ভারতবাসী ঐ ঘটনার কথা-ঐ মানুষগুলোর কথা ভুলেই গেছে। যাদের বয়স কম তারা জানেই না এই ঘটনার কথা। বিচারে দেরীর কি এটাই উদ্দেশ্য? (পরবর্তী অংশ)


ব্যবসা-ভিক্ষাবৃত্তি

জুন 12, 2010


গাড়ি করে চলেছেন গন্তব্যের দিকে- ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে পরেছেন-একটা অপরিচ্ছন্ন, অশক্ত, অভুক্ত মানুষের করুন হাত আপনার দিকে এগিয়ে এলো-”দুটো পয়সা দেবেন”- এ অভিজ্ঞতা আমাদের সবারই কম বেশী আছে। বড় বড় রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, মন্দির-মসজিদ বা যেখানে লোক সমাগম বেশী সেখানে এদের উপস্থিতি আমাদের সবারই নজরে পরে প্রতিনিয়তই। ছোট ছোট শিশু, অস্থিচর্মসার বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, রুগ্ন মহিলা এবং শারীরিক প্রতিবন্ধি মানুষগুলোর ভিক্ষের জন্য করুণ আর্তিতে বেদনাহত হয়ে বা অনেক সময় পূণ্যলাভের আশায় -আমরা কিছু সাহায্য করি। কিন্তু আমরা যেটা অনেকেই জানিনা যে ওই ভিক্ষার অর্থ যা আমরা ভিখিরিটির হাতে তুলে দিলাম তাতে হয়তো তার কোনোই অধিকার নেই।
(পরবর্তী অংশ)